Wednesday, September 23, 2020

সেফটি ভাল্ভ এর স্টীম টেস্ট

স্টীম টেষ্ট

স্টীম টেস্ট বা বাষ্প পরীক্ষা হচ্ছে বয়লারের সেফটি ভাল্ভ এর বাস্তব ও প্রকৃত পরীক্ষা যার মাধ্যমে নিশ্চিত করার করা হয় যে সেফটি ভাল্ভ গুলি কার্যকরভাবে অতিরিক্ত বাষ্প থেকে বয়লারকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট এবং সেগুলি যখন সর্বোচ্ছ কার্যকরী বাষ্পচাপে পৌঁছে যায় তখন কাজ করে কিনা।


স্টীম টেস্ট এর সময় বয়লারের প্রেসার এ্যাকুমুলেশন (Accumulation) যদি বয়লারের সর্বোচ্ছ কার্যকরী বাষ্পচাপের ১০ শতাংশের বেশী হয় তাহলে সে সেফটি ভাল্ভ বয়লারের জন্য সঠিক নয়, সেক্ষেত্রে সেফটি ভাল্ভটি পরিবর্তন করে বেশী ডিসচার্জিং এরিয়ার সেফটি ভাল্ভ স্থাপন করতে হবে।

রেগুলেশন অনুসারে প্রত্যেক নতুন বয়লারে ও যখন  সর্বোচ্ছ অনুমোদিত কার্যকরী বাষ্পচাপে পরিবর্তন করা হয় তখন সেফটি ভালভের স্টীম টেস্ট করা হয়। 



Monday, September 21, 2020

বয়লারের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন: বাষ্প লাইন ভালভে ইনসুলেশন করুন-INCREASE BOILER EFFICIENCY: INSULATE YOUR VALVES

 বয়লারের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন: বাষ্প লাইন ভালভে ইনসুলেশন করুন


অনেক কারখানায় বাষ্প লাইন ভালভে ইনসুলেশন ব্যবহার করে না এবং অনেক কারখানায় বাষ্প লাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বয়লার রুমে ভালভের ইনসুলেশন অপসারণ করে এবং ঝামেলা মনে করে কখনও পুনরায় ইনসুলেশন করে না



বাষ্প লাইন ভালভে ইনসুলেশন ব্যবহার না করলে তাপের অনেক লস হয় এবং য়লার রুমকে অসহ্য গরম করে তুলতে পারে । এছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাষ্প লাইন ও বয়লার ইলাকায় সহজে প্রবেশ করা যায় পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়।

বয়লারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সেফটি ভাল্ব -Different types of safety valve used in boilers

বয়লারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সেফটি ভাল্ব -

১. ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ব

২. হাই ষ্টীম এন্ড লো ওয়াটার সেফটি ভাল্ব

৩. স্প্রীং লোডেড সেফটি ভাল্ব




Sunday, September 6, 2020

সেফটি ভালভ এবং রিলিফ ভালভের মধ্যে পার্থক্য (Difference Between Relief Valve and Safety Valve)

প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিগুলোতে বিভিন্ন প্রেসারাইজড সিসটেম এ মানুষের জান, মাল ও পরিবেশ রক্ষার জন্য সেফটি ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।  সেফটি ভালভ ও প্রেসার রিলিফ ভালভ দুটো টার্মই অল্টারনেটভাবে  প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিগুলোতে ব্যবহৃত হয়

প্রেসার রিলিফ ভালভ ও সেফটি ভালভ দুইটিই নিরাপত্তা প্রক্রিয়ায় শিল্পে অত্যধিক চাপ প্রতিরোধ করার জন্য ডিজাইন করা ডিভাইস।

যদিও, উভয় ডিভাইসই প্রায় একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, পার্থক্যটি মূলত তারা কীভাবে কাজ করে তার মধ্যে রয়েছে।

রিলিফ ভালভ কি?

রিলিফ ভালভ যা প্রেসার রিলিফ ভালভ নামে পরিচিত। রিলিফ ভালভ চাপযুক্ত সিষ্টেম ব্যবস্থার একটি অন্যতম জটিল ডিভাইস যা সিস্টেমের অতিরিক্ত চাপের কারনে দুর্ঘটনাএড়াতে প্রিসেট প্রেসারে খুলে সিষ্টেসকে রক্ষা করে।
প্রতিটি চাপযুক্ত সিষ্টেম ব্যবস্থায় একটি সেটপয়েন্ট সীমা দিয়ে রিলিফ ভালভ সেট করা হয়, যার উপরে প্রেসার হলে ভালভ খুলতে শুরু করে।

সেফটি ভালভ কি?  

সেফটি ভাল্ভ হচ্ছে বয়লারের প্রধান এবং শেষ নিরাপত্তা ডিভাইস। বয়লারের অভ্যন্তরে নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে বাষ্প উৎপন্ন হলে তা বাইরে বের করে বয়লারকে দুর্ঘটনা থেকে নিরাপদ রাখে। নির্ধারিত চাপের অধিক চাপ হলে সেফটি ভালভ খুলে যায় এবং চাপ কমে নির্ধারিত চাপ সীমাতে হ্রাস হওয়ার সাথে সাথে এটি বন্ধ হয়ে যায়।

Saturday, September 5, 2020

বয়লার দক্ষতা ক্যালকুলেশন- Boiler Efficiency Calculation

 

বয়লারের দক্ষতা (Boiler Efficiency) নির্ণয়ের জন্য সাধারণত দুটি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়:

  1. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct Method) বা ইনপুট-আউটপুট পদ্ধতি
  2. পরোক্ষ পদ্ধতি (Indirect Method) বা হিট লস পদ্ধতি

1. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct Method):

পদ্ধতিতে বয়লারের আউটপুট শক্তিকে ইনপুট শক্তির সাথে তুলনা করা হয়।

সুত্র:

 


2. পরোক্ষ পদ্ধতি (Indirect Method):

এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন ক্ষতির (heat losses) হিসাব করা হয় এবং দক্ষতা নিম্নলিখিত সূত্র দ্বারা নির্ণয় করা হয়:






Friday, September 4, 2020

বয়লার সেফটি ভাল্ভ এর পরীক্ষা

বয়লার সেফটি ভাল্ভ এর পরীক্ষা


সেফটি ভালভ বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করা যায় নিম্নোক্ত কয়েকটি পরীক্ষার বিষয়ে আলোচনা করা হল-


বেঞ্চ টেস্টিং (Bench Testing

সেফটি ভাল্ভ এর পরীক্ষার সবচেয়ে কমন টেস্টিং পদ্ধতি হচ্ছে এটি এই পদ্ধতিতে বয়লার কে সম্পূর্ন বন্ধ করতে হয় এবং সেফটি ভাল্ভ খুলে পরীক্ষাগারে নিতে হয়। পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে পুনরায় বয়লারে স্থাপন করা হয়। এ পদ্ধতি সাধারনত সেফটি ভাল্ভ প্রস্তুতের পর করা হয়।


ইনলাইন টেস্টিং (Inline Testing

সেফটি ভাল্ভ এর পরীক্ষার এটি একটি উত্তম পদ্ধতি এই পদ্ধতিতে বয়লার বন্ধ করতে হয় না। ইনলাইন টেস্টিং (Inline Testing) এ প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান দ্বারা বয়লার চালু অবস্থায় সেফটি ভাল্ব এর সেট প্রেসার পরীক্ষা করা হয়। এই পদ্ধতিটি অধীক পছন্দনীয় কারন এতে বয়লার বন্ধ করতে হয় না এবং গ্রহনযোগ্য সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।


অপারেটেড ইন-প্লেস টেস্টিং (Operated in Place)

এটা হচ্ছে বয়লারের সেফটি ভাল্ভ পরীক্ষা করার একটি মেনুয়্যাল পদ্ধতি যখন ইচ্ছা তখন করা যায়। এ পদ্ধতিতে সেফটি ভাল্ভ এর টেষ্ট লিভার তুলে পরীক্ষা করা হয়, সেফটি ভাল্ভটি খোলা ও বন্ধ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য। এধরনের টেষ্ট এ সেফটি ভাল্ভ এর সেট প্রেসার জানা যায় না।


সেফটি ভালব এর গঠন ও কার্যপদ্ধতি (Structure and working of safety valve)

সেফটি ভাল্ভ, বয়লারের অভ্যন্তরে নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে বাষ্প উৎপন্ন হলে তা বাইরে বের করে বয়লারকে দুর্ঘটনা থেকে নিরাপদ রাখে। 


 

বয়লার মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষণে সচরাচর ভুলসমূহ (Common Mistakes in Boiler Maintenance)

 

বয়লার মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষণে সচরাচর  যে ভুলসমূহ হয়ে থাকেঃ


১) নিয়মিত গ্যাসকেট পরিবর্তণ না করা

২) নিম্নমানের রিফ্রাক্টরিজ মেটারিয়াল ব্যবহার করা

৩) নিম্নমানের ডি-স্কেলিং মেটারিয়াল ব্যবহার করা

৪) লিকেজ টিউব ব্লাইন্ড করে রাখা

৫) ফ্লু-গ্যাস নির্গমন পথ নিয়মিত পরিস্কার না করা

৬)  রেগুলেশন অনুযায়ী প্রতি বছর হাইড্রোলিক টেস্ট না করা

৭) সেফটি ভালভ পরীক্ষা না করা

৮) সেফটি ভালভ ও গেজ গ্লাস ক্যালিব্রেশন না করা।

৯) বয়লার ব্যবহার না হলে সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা

১০) ‍নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রিভেন্টিভ মেইনেটেন্যান্স না করা


 

বয়লার পরিচালনায় সচরাচর ভুলসমূহ (Common Mistakes in Boiler Operation)

 বয়লার পরিচালনায় সচরাচর  যে ভুলসমূহ হয়ে থাকেঃ


১) অনুমোদিত চাপের অধিক চাপে বয়লার চালানো

২) বয়লার রুমের ত্রুটি

৩) স্টিম লাইনে ইনসুলেশন না থাকা

৪) সনদপত্রধারী বয়লার পরিচারকের পরিচালনায় বয়লার না থাকা

৫) লগবুক সংরক্ষণ না করা

৬) সেফটি ভালভের দিকে নজর না দেওয়া ( নিয়মিত পরীক্ষা না করা)

৭) গেজ গ্লাসে লিকেজ ও ঘোলা থাকা

৮) দুটি সেফটি ভালভ ব্যবহার না করা

৮) দুটি গেজ গ্লাস ব্যবহার না করা

৯) নিয়মিত ব্লো-ডাউন না করা

১০) পারশোধিত পানি  ব্যবহার না করা

বয়লার হাইড্রলিক টেষ্ট (Boiler Hydrostatic testing)

হাইড্রোলিক পরীক্ষা

হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষা এমন একটি পরীক্ষা যার সাহায্যে চাপবাহী বিভিন্ন ভেসেল যেমন পাইপলাইন, গ্যাস সিলিন্ডার, বয়লার এবং জ্বালানী ট্যাঙ্কগুলি শক্তি এবং লিকেজ পরীক্ষা করা হয়। আমরা এখানে শুধু বয়লারের হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করবো।

 

হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষার উদ্দেশ্য

নিম্নলিখিত বিষয়গুলো যাচাই করতে বয়লারে হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষা করা হয়:

 

১) বয়লার চাপমান অংশগুলিতে লিকেজ (টিউবস, হেডারস এবং পাইপ) পরীক্ষা করার জন্য। ।

২) ওয়েল্ডিং জয়েন্ট ও এর সাথের বিভিন্ন প্লেট এর শক্তি পরীক্ষা করা।

৩) অপারেটিং তাপমাত্রায় বয়লারের কার্যক্ষম চাপের চেয়ে বেশি চাপে বয়লার চাপ অংশগুলির শক্তি পরীক্ষা করার জন্য।

 

বয়লার হাইড্রোলিক পরীক্ষা নিম্নলিখিত শর্তাবলী / পরিস্থিতিতে করা হয়।

 

১) বয়লার এর ইরেকশন কাজ সমাপ্তির পরে

২) বয়লার চাপ অংশগুলির মেরামত কাজ শেষ হলে।

৩) বার্ষিক ওভারহোল সমাপ্তির পরে। নির্দেশে।

৪) নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জন্য প্রয়োজন হলে পরিদর্শন কর্তৃপক্ষের  নির্দেশে। 

 

বয়লার হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি:

বয়লার এর সকল চাপমান অংশ ইনস্টালেশন সম্পন্ন হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা।

সমস্ত ওয়েল্ডিং / এনডিটি এবং হিট ট্রিটমেন্ট কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে তা নিশ্চিত করা।

ড্রইং অনুযায়ী সকল প্রেসার পার্ট অংশ ওয়েল্ডিং সম্পন্ন হয়েছে তা নিশ্চিত করা।

নিশ্চিত করুন যে চাপমান অংশগুলি ওয়েল্ডিং জয়েন্টগুলি রং এবং মরিচা থেকে মুক্ত।

নিশ্চিত করুন যে বয়লারের সকল স্ট্রাকচার ও সাপোর্ট গুলো ড্রইং ডিজাইন অনুযায়ী স্থাপন করা হয়েছে।

নিশ্চিত করুন যে, বয়লারের এবং ড্রামের ভিতরের সমস্ত অস্থায়ী সরঞ্জাম এবং অস্থায়ী সাপোর্ট সরানো হয়েছে।

নিশ্চিত করুন যে, স্টিম ড্রাম, ম্যানহোল এর কভার সঠিকভাবে লক ও সিলড করা হয়েছে।

 

বয়লার পানিভর্তি করার ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে তা নিশ্চিত করুন।

হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষার পাম্প প্রস্তুত রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।

হাইড্রোস্ট্যাটিক পরীক্ষার পাম্প বিদ্যুত সংযোগ নিশ্চিত করুন।

প্রযোজনীয় গুণমান এর পানি প্রাপ্যতা নিশ্চিত করুন। (বয়লার জল ধারণ ক্ষমতার ন্যূনতম তিন গুন পানিধারণ ক্ষমতার ট্যাংক থাকতে হবে।  

বয়লার ড্রাম এবং বয়লার গুরুত্বপূর্ণ গসকেটের জন্য কমপক্ষে দুটি সেট অতিরিক্ত গ্যাসকেট প্রস্তুত থাকতে হবে।

নিশ্চিত করুন যে সঠিক আলোকসজ্জা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে।


অনলাইনে বয়লার পরিচারক যোগ্যতা সনদ যাচাই( Check Boiler Attendant Certificate Online)

 ব্রাউজার এর এ্যড্রেসবারে boiler.gov.bd লিখে Enter বাটনে ক্লিক করলে নিচের পেইজটি আসবে। পেইজটি মেন্যু বারে সনদ যাচাই মেন্যুতে মাউস রাখলে একটি ড্রপডাউন মেন্যু আসবে সেখান থেকে  পরিচারক সনদ যাচাই এ ক্লিক করতে হবে।





 

পরিচারক সনদ যাচাই এ ক্লিক করলে নিচের ফরমের মত একটি পেইজ আসবে । উক্ত ফেইজে Attendent Type এর ড্রপডাউন মেন্যু হতে পরিচারকের সনদপত্রের ধরন মেন ১ম বা ২য় সিলেক্ট করতে হবে, অতপর Attendant Certificate No: এর ঘরে সনদপত্র নম্বরটি লিখতে হবে, যেমন 2345 । 


অতঃপর Submit বাটনে ক্লিক করলে উক্ত বয়লার পরিচারকের সনদপত্রের বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত নিচের পেইজটির মত একটি পেইজ আসবে। 


 


Thursday, September 3, 2020

সুপার হিটার (Superheater)

সুপার হিটার (Superheater)

স্যাসুরেটেড স্টিমকে (saturated steam)  সুপারহিটেড স্টিম (superheated steam) এ রুপান্দর তরা হয় যে ডিভাইসের মাধ্যমে সেটিই সুপার হিটার নামে পরিচিত। স্টিম টারবাইনে স্যাসুরেটেড স্টিমকে (saturated steam) ব্যবহার করলে টারবাইনের ব্লেড ক্ষতিগ্রস্থ হয় বিধায় স্টিম টারবাইনে সুপারহিটেড স্টিম (superheated steam) ব্যবহার করতে হয়। সাধারনত তিন ধরনের সুপার হিটার রয়েছে যেমন রেডিয়েন্ট সুপার হিটার, কনভেকশন সুপার হিটার ও সেফারেটলি ফায়ার্ড সুপার হিটার।

সুপার হিটার (Superheater)

 

 

 


ইকোনোমাইজার (Economizer)

ইকোনোমাইজার (Economizer)

বয়লারের ফিড ওয়াটরকে গরম করার জন্য ইকোনোমাইজার ব্যবহার করা হয়। ইকোনোমাইজারও এক ধরনের হিট এক্সচেঞ্জার। অনেকগুলো টিউবের সমন্বয়ে ইকোনোমাইজার গঠিত। গরম বাতাস  চিমনী দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে এটি স্থাপন করা হয়। নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে ইকোনোমাইজার বয়লারের ইকোনোমি উন্নত করে। প্রায় সকল ধরনের বয়লারেই ইকোনোমাইজার ব্যবহার করা হয়। ইকোনোমাইজার এর টিউবের ভিতরে থাকে পানি এবং বাইরে থাকে গরম বাতাস । 



প্রায় সকল ধরনের বয়লারেই ইকোনোমাইজার ব্যবহার করা হয়।

এয়ার প্রিহিটার

 এয়ার প্রিহিটার

এয়ার প্রিহিটার হচ্ছে এক ধরনের হিট এক্সচেঞ্জার। এক্জস্ট ফ্লু গ্যাস  হতে তাপ উদ্ধার  করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। বয়লার চিমনী এবং বয়লার ইকোনোমাইজারের মধ্যবর্তীস্থানে এয়ার প্রিহিটার স্থাপন করা হয়। এয়ার প্রিহিটার এর মধ্যে exhaust flue gases   হতে combustion air  তাপ গ্রহন করে যার ফলে কোন কোন বয়লারে এয়ার প্রিহিটার ব্যবহারে ৫%-১০% পর্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয় হয়।


সকল বয়লারে এয়ার প্রিহিটার ব্যবহার হয়না, বিশেষ করে স্মল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল বয়লার ও প্যাকেজটাইপ বয়লারে এয়ার প্রিহিটার খুব কমই ব্যবহার করা হয়। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লার ও বিভিন্ন প্রসেস ইন্ডাষ্ট্রিতে এয়ার প্রিহিটার ব্যবহার হয়।

বয়লার মাউন্টিংস

বয়লার মাউন্টিংস

বয়লার মাউন্টিংস হচ্ছে বয়লারের আবশ্যকীয় কিছু ডিভাইস যা বয়লার  সঠিক ও নিরাপদভাবে পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

বয়লারে ব্যবহৃত বিভিন্ন মাউন্টিংস

 ১) সেফটি ভালভ

২) প্রেসার গেজ

৩) ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

৪) স্টিম স্টপ ভালভ

৫) ব্লো-অফ কক

৬) ফিড চেক ভালভ

৭) ফিউজিবল প্লাগ

 

 

বয়লার এক্সেসরীজ

বয়লারের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যেসকল ডিভাইস ব্যবহার করাহয় সেগুলেই  বয়লার এক্সেসরিজ নামে পরিচিত।

 

যেমন-


১. ফিড পাম্প
২. সুপার হিটার
৩. ইকোনোমাইজার
৪. এয়ার প্রতি হিটার

বয়লার এক্সেসরিজ সাধারনত হিট লস কমিয়ে বয়লারের দক্ষতা বৃদ্ধি করে . সুপার হিটার, ইকোনোমাইজার
ও এয়ার প্রতি হিটার ফ্লু গ্যাসের নির্গমন পথে বসানো হয়।

 

এয়ার কক (Air Cock)

 বয়লার চালুর সময় বাষ্প উৎপন্ন নিশ্চিত হওয়ার জন্য এবং হাইড্রোলিক টেষ্টের সময় বয়লার সম্পুর্ণ পানি দ্বারা ভর্তি হয়েছে কিনা তা বুঝার জন্য বয়লারের উপরে এয়ার কক স্থাপন বা সংযোজন করা হয়।


এয়ার কক এর মাধ্যমে বয়লার চালু করার সময় বয়লারে অভ্যন্তরের বাতাস বের করে দেয়া হয় এবং বাষ্প উৎপন্ন শুরু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়। বাতাস বের না করা হলে বয়লারের অভ্যন্তরে বাষ্পের চাপ ও বাতাসের চাপের কারনে প্রেসার গেজে অসংগতিপূর্ণ মান (রিডিং) প্রদান করতে পারে। 


বয়লারে হাইড্রোলিক টেষ্টের সময় বয়লার পানি দ্বারা পরিপূর্ণ করতে হয়। বয়লারে পানি দ্বারা পরিপূর্ণ করার সময় বয়লারের অভ্যন্তরের বাতাস বাইরে বের করে দেয়ার জন্য এয়ার কক ব্যবহার করা হয় এবং পানি দ্বারা পরিপূর্ণ ভর্তি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এয়ার কক এর প্রয়োজন হয়।


ব্লো-ডাউন ভালব (blow Down Valve)

 ব্লোডাউন ভাল্ভ ব্যবহারের মাধ্যমে বয়লার এর ড্রামের নিচে জমাকৃত তলানি বের করা হয়।


 

বয়লারের অভ্যন্তরের পানির বিভিন্ন প্যারামিটার নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ব্লোডাউন ভাল্ব এর মাধ্যমে নিয়মিত ব্লো-ডাউন করতে হয়, অন্যথায় বয়লারের টিউব ও প্লেটে স্কেল জমে বয়লারে তাপ সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে। বয়লারে স্কেল জমলে বাষ্প উৎপাদন কমে যাবে জ্বালানী ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে এবং প্লেট, টিউব ইত্যাদি ক্ষয় হয়ে বয়লারের আযুষ্কাল কমে যাবে।

বিশেষ করে স্কেল হ্রাস করা, কোরোশন কমানো, ক্যারিওভার না হওয়ার জন্য নিয়মিত বয়লার নির্মাতার নির্দেশনা মোতাবেক অথবা বয়লার ওয়াটার পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ব্লো-ডাউন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও বয়লার ওয়াটারের পিএইচ বেড়ে গেলে ব্লো-ডাউন করে পিএইচ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

বয়লার দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয়

 বয়লার দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয়

ক) সাধারণ করণীয়ঃ

১। বয়লার চালনার পূর্বে প্রধান বয়লার পরিদর্শকের কার্যালয় হতে অবশ্যই নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে;

২। বাৎসরিক পরিদর্শনপূর্বক বয়লার চালনার সনদ নবায়ন করতে হবে;

৩। বয়লার সনদে উল্লেখিত নির্ধারিত চাপের মধ্যে সেফটি ভাল্ভ সেট বা বয়লার চালনা করতে হবে;

৪। উপযুক্ত সনদপত্রধারী (বয়লার পরিচারক) এর তত্ত্বাবধানে বয়লার চালনা করতে হবে;

৫। বয়লার এর কোন প্রেসার পার্টস এর কাঠামোগত পরিবর্তন বা সংযোজন এর ক্ষেত্রে প্রধান বয়লার পরিদর্শকের পুর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।


খ) কারিগরি বিষয়সমূহঃ

১। বয়লারে কমপক্ষে ০২(দুই) টি সেফটি ভালব ব্যবহারসহ কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে;

২। দুইটি ফিড পাম্প ব্যবহারসহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে;

৩। বিধি অনুযায়ী প্রেসার গেজ ব্যবহারসহ নিয়মিত ক্যালিব্রেশন করতে হবে;

৪। বয়লারে অবশ্যই পরিশোধিত পানি ব্যবহার করতে হবে;

৫। বয়লার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও তথ্য লগশীটে লিপিবদ্ধ করতে হবে।


গ) রক্ষণাবেক্ষনের জন্য  করণীয়ঃ

    বয়লার নিম্নেক্ত পদ্ধতিতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবেঃ

প্রতিদিনের করণীয়ঃ পরিশোধিত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, গেজ গ্লাস পরীক্ষণ, ব্লো-ডাউন নিশ্চিতকরণ ও লগবুকে তথ্য লিপিবদ্ধকরণ।

সাপ্তাহিক করণীয়ঃ ওয়াটার লেভেল কন্ট্রোলার পরীক্ষণ, ব্লোয়ার, আইডি ফ্যান, এফডি ফ্যান পরীক্ষণ, প্রেসার গেজ, প্রেসার সুইচ ও ফটোসেল পরীক্ষণ।

মাসিক করণীয়ঃ ফিড পাম্প, সেফটি ভালব, প্রেসার লিমিট সুইচ এবং ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রোলসমূহ পরীক্ষণ।

বার্ষিক করণীয়ঃ সকল গ্যাসকেট ও ভালবসমূহ পরীক্ষণ বা পরিবর্তন এবং বয়লার ডি-স্কেলিং ও ক্লিনিং করে জলীয় পরীক্ষা নিশ্চিতকরণ।


বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি বা কারণসমূহ (Causes of Boiler Accident)

 ক) নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে সেফটি ভালব সেটিং বা বয়লার চালানোঃ

বয়লার দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হচ্ছে বয়লার সনদে উল্লেখিত নির্ধারিত চাপের অধিক চাপে বয়লার চালনা করা। বয়লারে সেফটি ভালব ব্যবহার এর মাধ্যমে নির্ধারিত চাপে বয়লার চালনা নিশ্চিত করা হয়। বয়লার এর সেফটি ভালব কোন কারণে লক বা বন্ধ হয়ে গেলে বা কোনভাবে টেম্পারিং করা হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সেফটি ভালব নির্ধারিত চাপে সেট করতে হবে এবং নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।


খ) বয়লারে পানির লেভেল কমে যাওয়াঃ

বয়লার চালু অবস্থায় কোন কারণে পানির লেভেল নির্ধারিত লেভেলের চেয়ে কমে গেলে বয়লার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফিড পাম্প সঠিক সময়ে চালু না হলে পানির লেভেল নিচে নেমে যাবে ও বয়লারের অভ্যন্তরীণ টিউব, ড্রাম বা শেল বালজিং (ইঁষমরহম) হয়ে বয়লার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রত্যেকটি বয়লারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফিড পাম্প চালু ও বন্ধের ব্যবস্থা রাখতে হবে।


গ) প্রেসার গেজ এ ভুল রিডিংঃ

বয়লারে ব্যবহৃত প্রেসার গেজ এর অসংগতিপূর্ণ মান বা সঠিক রিডিং না হলে বয়লারের বাষ্প চাপ বৃদ্ধি পেয়ে বয়লার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই বিধি মোতাবেক যথাযথ প্রেসার গেজ ব্যবহার এবং সময়ে সময়ে প্রেসার গেজ ক্যালিব্রেশন নিশ্চিত করতে হবে।


ঘ) উপযুক্ত সনদপত্রধারী (বয়লার পরিচারক) ব্যক্তি ব্যতীত বয়লার চালানোঃ

বয়লার পরিচালনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত সনদপত্রধারী বা দক্ষ ব্যক্তির তত্ত্বাবধান  ছাড়া বয়লার চালালে বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।


ঙ) মানসম্মত গ্যাসকেট ব্যবহার না করাঃ 

বয়লার ও স্টিম পাইপ এর বিভিন্ন জয়েন্টে সঠিক মানের গ্যাসকেট ব্যবহার না করলে স্টিম লিকেজ হয়ে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।


চ) পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করাঃ

কোন বয়লারে পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করা হলে বয়লারের টিউব, প্লেট ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। বয়লারে পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করলে হার্ডনেস বৃদ্ধি পেয়ে প্রেসার পার্টস এ স্কেল জমে দক্ষতা হ্রাস পায় এবং  বয়লার দুর্ঘটনার ঝুুঁকি তৈরি হয়।


ছ) যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করাঃ

বয়লার নিরাপদভাবে চালনার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া দীর্ঘদিন একটানা বয়লার চালালে বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বয়লার সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে পরবর্তীতে চালু করার সময় বয়লার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।


লগশীট (Log Sheet)

বয়লার চালনার বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য লগশীট ব্যবহার করা হয়। বয়লার লগশীটে প্রতিদিনের তথ্য ঘন্টায় ঘন্টায় লিপিবদ্ধ করতে হয়। বয়লারের স্টীম উৎপাদন কমে গেলে বা ফ্লু গ্যাসের তাপমাত্র বেড়ে গেলে তার কারন লগবুকের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়। তাছাড়া বয়লার ক্লিনিং বা মেরামতের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে লগবুকের তথ্য সহায়ক ভ’মিকা পালন করে। 

বয়লার পরিচালনার ও চালু অবস্থায় বয়লারের বিভিন্ন তথ্য  লগশীটে লিপিবদ্ধ করতে হবে।

তারিখ

সময়

বাষ্পচাপ

বাষ্পের তাপমাত্রা

ফ্লু গ্যাসের তাপমাত্রা

ব্লোডাউন সময়

গেজ গ্লাস ক্লিনিং সময়

পরিচারকের নাম


পরিচারকের স্বাক্ষর              কর্মকর্তার স্বাক্ষর


বয়লারের কার্যক্ষমতা ও আয়ুষ্কাল বয়লারে ব্যবহৃত পানির সাথে সম্পর্কিত। তাই বয়লারের পানির গুনাগুন সঠিক রাখার জন্য নিয়মিত বয়লারে ব্যবহৃত পানির পরীক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করা জরুরী। 
বয়লারে ব্যবহৃত পানির মানমাত্রার তথ্য  নি¤œ বর্ণিতভাবে লগশীটে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
 
তারিখ  
সময় 
ফিড ওয়াটার -পিএইচ (pH), হার্ডনেস (Hardness) টিডিএস(TDS) 
 
বয়লার ওয়াটার-পিএইচ (pH) টিডিএস (TDS)
 
সফটনার রিজেনারেশনের সময়


পরীক্ষাকারীর স্বাক্ষর কর্মকর্তার স্বাক্ষর

এছাড়াও বয়লার ও বয়লারে ব্যবহৃত পানির  বিভিন্ন তথ্য ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী সংরক্ষণ করতে হবে।


বয়লারে ব্যবহৃত পানির গুনগত মান (Boiler Water Qulity)

বয়লারের কার্যক্ষমতা ও আয়ুষ্কাল বয়লারে ব্যবহৃত পানির বিভিন্ন মান মাত্রার (প্যারামিটার) উপর নির্ভর করে। বয়লারে পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করলে বয়লারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। দীর্ঘদিন পরিশোধিত পানি ব্যবহার না করলে বয়লারের প্রেশার পার্টস ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বয়লারে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। বয়লার নির্মাতার নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকারের বয়লারে পানির প্যারামিটার ভিন্ন হয়ে থাকে। স্বল্প ও মধ্যম কার্যকরী চাপের বয়লারে পানির প্যারামিটারসমূহ নিম্নরূপঃ 


ফিড ওয়াটার

১. পিএইচ (pH) : ৭-৯

২. হার্ডনেস : ০-৫ পিপিএম

৩. টিডিএস : সর্বোচ্চ ২৫০ পিপিএম


বয়লার ওয়াটার

১. পিএইচ (pH) : ৯-১১

২. টিডিএস (০-৩০০ পিএসআই বয়লারের জন্য): ৩৫০০ পিপিএম

 

বয়লার গ্যাস ট্রেন (Boiler Gas Train)

 বয়লার গ্যাস ট্রেন (Boiler Gas Train)  বয়লার গ্যাস ট্রেন (Boiler Gas Train) হলো একটি সিস্টেম, যা বয়লারের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস বা তরলীকৃত ...